সৌদি আরবের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের আবারো সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন এবং পশ্চিম এশিয়ায় অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য ইরানকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি রাজধানী রিয়াদে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেছেন।
তিনি বরাবরের মতোই আরব দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইরানের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে দাবি করেছেন, রিয়াদ এ অঞ্চলে কোনো যুদ্ধ চায় না। সৌদি আরব শান্তি চায় দাবি করে তিনি আরো বলেন, তারা অত্যন্ত উদ্বেগের সাথে এ অঞ্চলে ইরানের সামরিক তৎপরতার ওপর নজর রাখছে। তিনি অভিযোগ করেন ইরান এ অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এদিকে, সৌদি আরবের সঙ্গে সুর মিলিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছে, উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে আমিরাতের সমুদ্র বন্দরে সৌদি আরব, আমিরাত ও নরওয়ের চারটি তেলবাহী জাহাজে হামলা হয়েছে। সৌদি আরব ও পাশ্চাত্যের গণমাধ্যমগুলো তেলবাহী জাহাজে হামলা এবং সৌদি তেল সরবরাহ লাইনে ইয়েমেনি যোদ্ধাদের ড্রোন হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরান বিরোধী আবহ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ছাড়া, সৌদি আরব ও নরওয়ের সহযোগিতায় সংযুক্ত আরব আমিরাত জাহাজে হামলার ব্যাপারে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চিঠি দিয়েছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এসব তৎপরতা থেকে বোঝা যায় আমেরিকা, দখলদার ইসরাইল ও সৌদি আরব ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। তারা দুটি লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টা করছে। প্রথমত, তারা নিরাপত্তা পরিষদকে ব্যবহার করে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্র সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এর আগেও তারা ইয়েমেনকে ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের অভিযোগ তুলে এবং নিরাপত্তা পরিষদে আমেরিকার বানোয়াট দলিল প্রমাণ উত্থাপনের মাধ্যমে ইরান বিরোধী নাটক মঞ্চস্থ করার চেষ্টা করলেও তারা ব্যর্থ হয়। কারণ ইরানের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ ছিল সম্পূর্ণ মিথ্যা। এবারো সৌদি আরবের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবায়ের ইরানের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তুলেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমেরিকা, সৌদি আরব ও ইসরাইলের দ্বিতীয় উদ্দেশ্য হচ্ছে, ইরান ইস্যু টেনে এনে ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরবের মানবতা বিরোধী কর্মকাণ্ড ও সন্ত্রাসীদের প্রতি রিয়াদের সমর্থনের বিষয়টিকে ধামাচাপা দেয়া। পশ্চিম এশিয়া বিষয়ক খ্যাতনামা ব্রিটিশ সাংবাদিক প্যাট্রিক ককবার্ণ ইরানের বিরুদ্ধে সৌদি-মার্কিন নীতির তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এ অঞ্চলে যেকোনো উত্তেজনা সৃষ্টির দায় রিয়াদ কর্তৃপক্ষ সবসময়ই ইরানের ওপর চাপানোর চেষ্টা করে যা নতুন কিছু নয়। তিনি আরো বলেছেন, ইরান ও আমেরিকার মধ্যে যারা যুদ্ধ বাধাতে চায় এটা তাদের উস্কানিমূলক তৎপরতা। এদিকে, আমিরাতের বন্দরে তেলবাহী জাহাজে হামলার ব্যাপারে সৌদি সরকার আগামী ৩০ মে মক্কায় আরব দেশগুলোর জরুরি বৈঠক ডেকেছে। এর আগে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ বলেছিলেন, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান, আমিরাতের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন জায়েদ, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন আমেরিকাকে ইরানের বিরুদ্ধে সংঘাতে জড়ানোর চেষ্টা করছে।]]>