তেলের ওয়াগন লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় সারাদেশের সঙ্গে বন্ধ হয়ে যাওয়া রাজশাহীর ট্রেন চলা পুনরায় শুরু হয়েছে। প্রায় ২৯ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে দুর্ঘটনাস্থল অতিক্রম করে যাত্রীবাহী পদ্মা এক্সপ্রেস ট্রেন।
এর আগে রাত সাড়ে ১০টার দিকে তেলবাহী ট্রেনের আটটি ট্যাংকার ওয়াগন লাইন থেকে থেকে সরানো হয়। বগি সরাতে লেগেছে প্রায় ২৫ ঘণ্টা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, খারাপ আবহাওয়ার কারণে তেলবোঝাই বগিগুলোকে লাইনে তুলতে ২৫ ঘণ্টা সময় লেগে গেল। তবে বগিগুলো লাইনে তোলার এক ঘণ্টার মধ্যেই সারাদেশের সঙ্গে ট্রেন যোগাযোগ স্থাপন সম্ভব। বগি লাইনচ্যুতির কারণে রেল পরিষেবা বন্ধ হয়ে পড়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রসঙ্গত, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চারঘাট উপজেলার হলিদাগাছির দিঘলকান্দি ঢালানের কাছে তেলবাহী ওই ট্রেনের আটটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তেলবাহী ওই ট্রেনটি খুলনা থেকে আসছিল।
বগি লাইনচ্যুতির পর রাত পৌনে ১০টার দিকে ঈশ্বরদী থেকে রিলিফ ট্রেন পৌঁছে ঘটনাস্থলে। এরপর শুরু হয় উদ্ধার কাজ। ট্রেন লাইনচ্যুতির কারণে যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়ায় রাজশাহী থেকে বুধবার রাতের এবং বৃহস্পতিবার সারাদিনের সব ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়। এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহীদুল ইসলাম জানান, যে এলাকায় ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়েছিল সেখানকার লাইন সংস্কারের কাজ চলছিল। পুরাতন স্লিপার পরিবর্তন করে নতুন স্লিপার বসানো হচ্ছিল। নতুনভাবে দেয়া হচ্ছিল পাথরও। কিন্তু যারা সংস্কার কাজ করেছেন, তারা স্লিপারের সঙ্গে লাইন আটকানো কয়েকটি পিন (ডগস্পাইক) খুলে রেখেছিলেন। পাথর ফেলার কারণে সেটি ঢেকে যায়। এ কারণে সেটি কারও চোখে পড়েনি। সংস্কার কাজে নিয়োজিত রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুর রশিদও তা খেয়াল করেননি। ফলে ওই পথ দিয়ে ট্রেন যাওয়ার পথে সেটি লাইনচ্যুত হয়। এ কারণে প্রকৌশলী আবদুর রশিদকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া ঘটনা তদন্তে বিভাগীয় ট্রান্সপোর্ট অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে এই কমিটিকে। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।