কক্সবাজারের মহেশখালীতে এক তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া ও তা শালিসের মাধ্যমে মীমাংসার চেষ্টার অভিযোগে কালারমারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তারা হলেন- ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য লিয়াকত আলী ও একই ইউনিয়নের সংরক্ষিত ১ নম্বর ওয়ার্ডের নারী সদস্য খতিজা বেগম।
পুলিশ জানায়, শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে এ দুই জনপ্রতিনিধিকে আদালতে হাজির করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। রোববার (১৪ জুলাই) রিমান্ড শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী চট্টগ্রামে একটি বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করতেন। সেখান থেকে গত ৭ জুলাই মহেশখালীর মাতারবাড়ির সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য শামীমা আক্তারের বাড়িতে আসার পথে তাকে তুলে পাহাড়ে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে একদল যুবক। এ ঘটনায় শুক্রবার (১২ জুলাই) রাতে ভুক্তভোগী তরুণী বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখপূর্বক ও অজ্ঞাতনামা আরও সাত-আটজনকে আসামি করে মহেশখালী থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় স্থানীয় ইউপি সদস্য লিয়াকত আলী ও খতিজা বেগমকেও আসামি করা হয়েছে।
ওসি বলেন, এ দুই জনপ্রতিনিধি ও নলবিলা মাঝের পাড়ার আবদুর রশিদের ছেলে মনু মিয়াসহ এজাহারভুক্ত ছয় জনের মধ্যে ইতোমধ্যে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ৭ জুলাই ধর্ষণের ঘটনা ঘটলেও ধর্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন ইউপি সদস্য লিয়াকত ও খতিজা। শুধু তাই নয়, এ ঘটনা যাতে কেউ না জানে ও ধর্ষিতা যেন পুলিশের কাছে না যায়, সেজন্য তাকেও চাপ দেওয়া হয়। এমনকি, ধর্ষকদের বাঁচাতে এ ঘটনাটি শালিসের মাধ্যমে মীমাংসা করার চেষ্টা চালান ওই দুই জন।
নির্যাতিতার স্বজনরা জানান, মহেশখালীর নারী ইউপি সদস্য শামীমা আক্তারের এক মেয়ে ব্লাড ক্যান্সারে মারা গেছেন। ওই মেয়েটির চেহারা অনেকটা নির্যাতিতা এ তরুণীর মতো। একারণে শামীমা তাকে নিজের মেয়ের মতো দেখতেন, তরুণীও শামিমাকে মা বলে ডাকতেন।
তারা জানান, ঘটনার দিন চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়ার বদরখালী হয়ে মহেশখালীর মাতারবাড়িতে শামীমার কাছে আসছিলেন ওই তরুণী। পথিমধ্যে টাকার ব্যাগ হারিয়ে ফেলেন তিনি। বিষয়টি শামীমাকে জানালে, তিনি তরুণীকে চাইল্যাতলী পর্যন্ত এসে ফোন দিতে বলেন। এসময় কয়েকজন সিএনজিচালক বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই তরুণীকে জোর করে পাশের পাহাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করে।