র্যাবের তল্লাশি চৌকি। ‘পুলিশ’ লেখা একটি প্রাইভেট কার পার হচ্ছে। গাড়িটি থামতে দেওয়া হলো সংকেত। ভেতর থেকে বলা হয় পুলিশ। কৌতুহল জাগে র্যাব সদস্যদের। প্রাইভেট কারে থাকা ‘পুলিশ কর্মকর্তাকে’ নামতে বলেন।
গাড়ি থেকে নেমে আসার পর পরিচয়পত্র দেখতে চান র্যাব সদস্যরা। দেখানো হয় পুলিশের লোগোযুক্ত একটি পরিচয়পত্র। কিন্তু তা দেখে সন্দেহ জাগে। শুরু হয় জিজ্ঞাসাবাদ; গাড়িতে তল্লাশি। প্রাইভেট কারে মেলে নগদ ২৭ লাখ টাকা। গ্রেপ্তার করে নেওয়া হয় র্যাব কার্যালয়ে।
পরে জানা যায়, চাকরি দেওয়ার কথা বলে মানুষের কাছ থেকে টাকা তুলতেন স্ত্রীর অভিযোগে চাকরিচ্যুত পুলিশ কর্মকর্তা। আর পুলিশ বাহিনীর সদস্য না হয়েও তিনি এই পরিচয় তিনি দিয়ে বেড়াতেন। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রবিবার রাতে রাজধানীর রামপুরায় একটি তল্লাশি চৌকি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ এসবি থেকে চাকরিচ্যুত সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) কে। তার নাম কবির হোসেন শেখ।
র্যাব-৩ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গণমাধ্যমের কাছে। তিনি জানান, গ্রেপ্তার কবির শেখ পুলিশের চাকরিচ্যুত এএসআই। তারপরও তিনি পুলিশের পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন।
‘গ্রেপ্তারের পর তার কাছ থেকে ভুয়া সিল, নিয়োগপত্রসহ বিভিন্ন কাগজপত্র পাওয়া গেছে। তিনি কাউকে চাকরি দিয়ে দেবে, কাউকে কাজ পাইয়ে দেবে এগুলো অবৈধ ভাবে করতেন টাকার বিনিময়ে। গ্রেপ্তারের সময় তার গাড়ি থেকে ২৭ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।’
টাকা কোথায় যাচ্ছিল এমন প্রশ্নে এমরানুল হাসান বলেন, ‘চাকরি দেওয়ার কথা বলে তিনি বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা সংগ্রহ করেছেন। নিয়োগ দিয়ে দেবেন বলেই মানুষের কাছ থেকে টাকা নিতেন।’
র্যাবের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, গ্রেপ্তার এএসআই কবির শেখ ঢাকার এসবিতে কর্মরত ছিলেন। এক বছর আগে স্ত্রীর অভিযোগের কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছেন। তবে চাকরি ফিরে পাওয়ার আশায় ছিলেন। গাড়িতে পুলিশ লিখে ঘুরে বেড়াতেন।
টাকা উৎস সম্পর্কে র্যাব কর্মকর্তারা জানান, একটা কোম্পানির মামলা নিষ্পত্তির কথা বলে টাকাগুলো নিয়েছিলেন কবির শেখ। সেগুলো জব্দ করা হয়েছে। কোন মালিক কী কারণে দিয়েছে সেটা আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তি হবে।
‘তিনি যে ভুয়া আইডিও ভুয়ার স্টিকার ব্যবহার করেছেন, এটা একটা প্রতারণা। এই কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে’-বলেন ওই র্যাব কর্মকর্তা।