রাজধানীর দক্ষিণখানে একাধিক নারীকে ধর্ষণ ও পুরুষকে বলাৎকারে অভিযুক্ত মসজিদের ইমাম ইদ্রিস আহম্মেদকে (৪২) একদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।
দশ দিনের রিমান্ড আবেদনের শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম মাসুদ উর রহমান এ আদেশ দেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দক্ষিণখান থানার এসআই প্রদীপ কুমার তরফদার এ রিমান্ড আবেদন করেন।
এর আগে গত রবিবার রাতে এই আসামিকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-১। এরপর সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে র্যাব ১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল সারওয়ার বিন কাশেম সংবাদ সম্মেলন করেন।
সেখানে র্যাব জানায়, ইদ্রিস আহম্মেদ মসজিদে ইমামতি ও মাদ্রাসার শিক্ষকতাকে কাজে লাগিয়ে দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে একাধিক নারীকে ধর্ষণ ও পুরুষকে বলাৎকার করেছেন। নিজের কাছে জিন বন্দি আছে বলে প্রচার চালাতেন। আর সেই জিন দিয়ে রোগ সারানো হয়। এরপর এলাকার নারীরা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার জন্য তার কাছে যেতে শুরু করেন। আর এ সুযোগে জিনের ভয় দেখিয়ে ওইসব নারীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করতেন ইদ্রিস। আর সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করাতেন সহযোগীদের দিয়ে। এমনকি পরে সেই সহযোগীকেও ধর্ষণের সুযোগ দিতেন তিনি। ফলে ভিডিও ধারণকারীও ঘটনা বাইরে প্রকাশ করতে সাহস পেত না। তবে কতজন নারী-পুরুষকে তারা এভাবে নির্যাতন করেছে, তার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি। কেবল চার-পাঁচ নারীকে যে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে, তার ভিডিও ইদ্রিস আহম্মেদের মোবাইলে পাওয়া গেছে। যদিও সামাজিক অবস্থান ও মানসম্মানের ভয়ে এসব নারী কারও কাছে অভিযোগ করার সাহস পাননি।
এছাড়া তিনি মাদ্রাসায় পড়তে আসা ১০ থেকে ১২ বছরের কমপক্ষে ১২ শিশুকে একাধিকবার বলাৎকার করেছেন বলে জানায় র্যাব। শুধু তা-ই নয়, ভিডিও ধারণ করে মাদ্রাসা ও মসজিদে থাকা তার খাদেমদেরও একাধিকবার বলাৎকার করেছেন।
ইদ্রিস আহম্মেদের বাড়ি সিলেটে। সেখানকার একটি মাদ্রাসা থেকে ১৯৯৮ সালে তিনি টাইটেল পাস করেন। এরপর সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের একটি মসজিদে ইমামতি, পাশাপাশি একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। ২০০২ সালে ঢাকায় দক্ষিণখানে একটি মসজিদের ইমাম হিসেবে নিযুক্ত হন।