ডেঙ্গুর প্রতিষেধক বলতে কিছু নেই-এমন মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। তিনি বলেছেন, তথাকথিত কোনো হোমিও চিকিৎসক যদি ডেঙ্গুর প্রতিষেধকের কথা বলে থাকেন তাতে কান দেওয়া মোটেই উচিৎ হবে না। কারণ আমাদের জানামতে, ডেঙ্গুর কোনো প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি।
রোববার (২৮ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর মগবাজারের নয়াটোলা শিশুপার্ক উদ্বোধনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমাদের দেশের চিকিৎসকেরা অনেক অভিজ্ঞ। তারা কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গুর চিকিৎসা করছেন, ভয়ের কোনো কারণ নেই। ডেঙ্গু হলে চিকিৎসক আছেন, চিকিৎসা হবে। ডেঙ্গুর জন্য কোনো ধরনের প্রতিষেধকের আশ্রয় না নেওয়াই মঙ্গলজনক বলে মনে করি আমি।
মগবাজার বিটিসিএল কলোনির জলাবদ্ধতা নিরসনে এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা উত্তর সিটির মেয়র আছেন। তার সঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। কলোনির জলাবদ্ধতা কিভাবে দূর করা যায়-সে বিষয়ে। এর একটা ব্যবস্থা আমরা সবাই মিলে করবো। বিটিসিএল, সিটি করপোরেশন অথবা সরকারি অন্য কোনো সংস্থাই হোক এই সমস্যার সমাধান করা হবে।
নয়াটোলা র্যাব অফিসের পাশে, শাহ সাহেব বাড়ি ও আমবাগান এলাকার জলাবদ্ধতার বিষয়ে তিনি বলেন, মেয়র মহোদয় ইতোমধ্যেই একটি প্রকল্প নিয়েছেন। আশা করি শিগগিরই এর সমাধান হয়ে যাবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ঢাকা শহরের চেহারা আমরা পাল্টে দেবো। আমাদের দুই মেয়র সেই লক্ষ্যেই কাজ করছেন।
৩৫ ও ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয়ের ভবন সিটি করপোরেশন থেকে করে দেওয়া হবে। স্থানীয় হাতিরঝিল ছাত্রলীগ নেতার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে নয়াটোলা পার্কের মধ্যে ইনডোর খেলাধুলার জন্য জায়গা করে দেওয়ার কথাও বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
এলাকাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দেশ দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে। আপনাদের যেসব দাবি এসব খুবই সামান্য। এগুলো সব পূরণ হয়ে যাবে। শুধু আপনারা ঐক্যবদ্ধ থেকে আপনাদের দাবিগুলো ন্যায়সঙ্গতভাবে উত্থাপন করবেন। তাহলেই সব বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি মাত্র ৪ মাস আগে এই সিটির দায়িত্ব নিয়েছি। আজকে এই পরিত্যক্ত পার্কটি আমরা শিশুদের জন্য নতুন করে নির্মাণ করে দিয়েছি। এই পার্ক রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কাউন্সিলর ও এই এলাকার জনগণের।
ডেঙ্গু একটি বড় চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এই ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। ডেঙ্গু মোকাবেলার জন্য প্রত্যেক বাড়িতে জমে থাকা পানি, টায়ার, ফুলের টব, এসির পানি, ফ্রিজের নিচের পাত্রের পানি পরিষ্কার করতে হবে।
‘মশার ওষুধ ম্যানুয়াল পদ্ধতি থেকে দ্রুত মেকানিক্যাল পদ্ধতিতে নেওয়ার চেষ্টা করছি। সিটি করপোরেশনের মাতৃসদন ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে বিনামূল্যে ডেঙ্গুর রক্ত পরীক্ষা করা হচ্ছে।’
এলাকাবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা ওয়েবসাইটে দেখে নেবেন, আপনার এলাকায় মশক কর্মীরা কখন ওষুধ দেবেন। তাদের ফোন নম্বর ও সুপারভাইজারদের নম্বর ওয়েবসাইটে দিয়েছি। কোন গলিতে কখন ওষুধ দেওয়া হবে সেটাও আপনারা মনিটরিং করতে পারবেন।
‘এছাড়া মশক ও পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ঠিকমতো কাজ করছেন কি না তা দেখার জন্য আগামী সপ্তাহ থেকে সবাইকে জিপিআরএস পদ্ধতির আওতায় নিয়ে আসা হবে। এর মাধ্যমে আমরা দেখতে পারবো তার ঠিকভাবে কাজ করছে কি না।’
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মেয়র পার্কে দুটি গাছের চারা রোপন করেন। পরে নয়াটোলা এলাকায় ডেঙ্গুর সচেতনতামূলক লিফলেটও বিতরণ করেন তারা।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোক্তার সরদার, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইঞ্জিনিয়ার তৈমুর রেজা খোকন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর নাজমুন নাহার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।