রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর বাসিন্দা মহিবুল্লাহকে (৬২) হত্যা করেন তারই দুই ছেলে-মেয়ে। এরপর থেকেই তারা সেটি ডাকাতদের কাজ বলে প্রচার করতে থাকেন। ঘটনা বিশ্বাসযোগ্য করতে ঘরের ভেতর মালামাল ছড়িয়ে ছিটিয়েও রাখেন তারা।
রোববার (২৮ জুলাই) রাতে যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলামের গণমাধ্যমকে বলেন, ঘটনার পরপরই ভাই-বোন মিলে এটিকে ডাকাতদের কাজ বলে প্রচার করতে থাকেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। তখন তারা জানান, ডাকাতরা তাদের বাবাকে হত্যা করতে পারে। বাসার ভেতর মালামালও ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখেন তারা। তবে, ভাই-বোনের কথাবার্তা অসংলগ্ন হওয়ায় দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা স্বীকার করেন, উত্তেজনাবশত তাদের বাবাকে তারা হত্যা করা হয়েছে। গ্রেফতার এ ভাই-বোনের নাম শামীম হোসেন ও ইতি।
জিজ্ঞাসাবাদে তারা পুলিশকে জানান, ছোটবেলা থেকেই বাবার ওপর নানা কারণে তাদের ক্ষোভ ছিল। বাবার কারণেই তাদের মা বিছানায় পড়ে আছেন। মাকে মারধর করে পঙ্গু করে ফেলেছেন বাবা মহিবুল্লাহ। শনিবার (২৭ জুলাই) রাতেও অসুস্থ মায়ের খাওয়া-দাওয়া নিয়ে তাকে আবার মারতে থাকেন। একপর্যায়ে ছেলে-মেয়ে বাধা দিতে গেলে তাদেরও মারধর করা হয়। তখন তারা উত্তেজিত হয়ে বাবার মাথায় আঘাত করেন। এতে বাবা মহিবুল্লাহ মারা যান।
তারা বলেন, আমরা বাবাকে হত্যা করতে চাইনি। উত্তেজনাবশত তার মাথায় আঘাত করি, এতে তিনি মারা যান।
শামীম ও ইতি দু’জনেই ছাত্র-ছাত্রী। এক জন পড়েন কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে, আরেকজন ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটিতে।
এ ঘটনায় মহিবুল্লার ভাই বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় দুই ভাই-বোনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
শনিবার (২৭ জুলাই) দিনগত রাত ৩টার দিকে বৃদ্ধ মহিবুল্লাহকে (৬২) হত্যা করা হয়।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, যাত্রাবাড়ী কোনাপাড়া মোমিনবাগ এলাকায় নিজ বাড়ির নিচতলায় স্ত্রী ও সন্তান নিয়ে থাকতেন মহিবুল্লাহ। তার মাথায় ভারি কিছু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। বিস্তারিত ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।