Wednesday , April 16 2025
ব্রেকিং নিউজ
Home / অন্যান্য খবর / পাবনায় করোনায় কর্মহীনদের ত্রাণ দেওয়ার নাম করে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ

পাবনায় করোনায় কর্মহীনদের ত্রাণ দেওয়ার নাম করে এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর অভিযোগ

উত্তরাঞ্চলীয় প্রতিনিধি : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সাধারণ ছুটিতে কর্মহীন শ্রমিকদের ত্রাণ সহায়তা তহবিল গঠনের নামে ২৬ লাখ টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে পাবনার স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে।
নির্বাহী প্রকৌশলী নিজের অনুসারী একটি প্রভাবশালী ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সাধারণ ঠিকাদারদের জোরপূর্বক এই তহবিলে অর্থ প্রদানে বাধ্য করেছেন বলে দাবি ভুক্তভোগী একাধিক ঠিকাদারের।
তবে, তহবিল গঠনে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করে ঠিকাদাররা নিজ উদ্যোগেই কাজটি করেছেন বলে দাবি নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম বাদশা মিয়ার।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী ঠিকাদার অভিযোগ করেন, গত রবিবার নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম বাদশা মিয়া নিজ কার্যালয়ে ফোন করে তাদের ডেকে নেন।
এ সময় তিনি করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে এলজিইডির বিভিন্ন প্রকল্পে কর্মরত শ্রমিকদের ত্রাণ সহায়তা তহবিল গঠনের কথা জানিয়ে অনুদান দিতে বলেন।
নির্দিষ্ট কোনো অঙ্ক বেঁধে না দিলেও সামর্থ্য অনুযায়ী দ্রুত অর্থ জমা দিতে তাগিদ দেন তিনি।
ওই তহবিলে এ পর্যন্ত প্রায় ২৬ লাখ টাকা চাঁদা জমা হয়েছে বলে দাবি ঠিকাদারদের। সামান্য কিছু ত্রাণ দিতে এত টাকার কি প্রয়োজন তা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী নাইস কন্সট্রাকশনের মালিক হাজী ফারুকের মাধ্যমে তার অনুসারী একটি দুর্নীতিবাজ ঠিকাদার সিন্ডিকেটকে দিয়ে ভয় দেখিয়ে এ অর্থ আদায় করেছেন। কেবল করোনা পরিস্থিতিই নয়, নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারকে খুশি করতে এলজিইডি অফিসে থার্টি ফার্স্ট উদ্‌যাপন, আস্ত খাসির বারবি কিউ পার্টি, বিজয় দিবসে ভোজসহ নানা অজুহাতে মাঝে মাঝেই জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেন তারা।
ঠিকাদাররা আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিকে মানবিক দৃষ্টিতে দেখে আমরা নিজেদের সাইটে কর্মরত শ্রমিকদের নিয়মিত সাহায্য করছি। আলাদা করে এলজিইডি থেকে ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন ছিল না। করোনা দুর্যোগে আমরাও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত, এরপরও পরিস্থিতির কারণে নির্বাহী প্রকৌশলীর খায়েশ পূরণ করতে বাধ্য হয়েছি।
ত্রাণ তহবিলে অর্থ প্রদানের কথা স্বীকার করে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদার রুহুল আমিন বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশার মিয়া প্রায় পনেরশ জন শ্রমিককে খাদ্য সহায়তার জন্য তহবিল গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রকৌশলী স্যারের অনুরোধে আমি এই তহবিলে পঞ্চাশ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছি। নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের সম্মানে অন্যান্য ঠিকাদাররাও এ তহবিলে অর্থ প্রদান করেছেন।
তবে, নির্বাহী প্রকৌশলীর ত্রাণ তহবিল গঠনকে সম্পূর্ণ অনৈতিক ও আইনবহির্ভূত বলে জানিয়েছেন পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ।
তিনি বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন ২০১২ এবং করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে যেকোনো ত্রাণ কার্যক্রম জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটিকে জানিয়ে এবং সমন্বয় করে পরিচালনা করতে হবে। যে কোনো অনুদান কিংবা ত্রাণ জেলা প্রশাসকের তহবিলে জমা দিতে হবে, কোথায় বিতরণ হচ্ছে তা জানাতে হবে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী কিংবা ঠিকাদারদের কেউই তাদের তহবিলের বিষয়ে আমাকে জানাননি। এটি নির্বাহী প্রকৌশলীর এখতিয়ার বহির্ভূত।
তবে, ত্রাণ কার্যক্রমে তহবিল গঠনে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী একেএম বাদশা মিয়া।
তিনি বলেন, ঠিকাদাররা নিজ উদ্যোগেই তহবিল গঠন করেছে। আমি কারও কাছে অর্থ চাইনি। চাঁদাবাজির প্রশ্নই ওঠে না।

About digitalbanladesh2

চেক

ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা নিয়ে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা, ব্যাংকের চাপ বাড়ছে

অর্থ-বানিজ্য ডেস্ক, ২৭মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট): আগামী মাস থেকে দেশের ব্যাংকগুলোতে ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *