এস,এম,আজিজুল হক:১৯ ডিসেম্বর ২০২২: দলীয় গঠনতান্ত্রিক বাধ্যবাধকতা এবং জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে দলীয় কার্যক্রমকে চাঙা রাখতে সম্মেলন করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। জেলা-উপজেলা থেকে কেন্দ্র পর্যন্ত সম্মেলন হলেও নেতৃত্বে আসছে না তেমন কোনো পরিবর্তন। এভাবে সাময়িক পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেলেও প্রকৃত পক্ষে দীর্ঘমেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দল। ক্রমান্বয়ে জট বাড়ছে পদপ্রত্যাশী নেতৃত্বের। ফলে ছাত্রলীগ করে আসা অসংখ্য নেতাকর্মি নিষ্ক্রিয় থাকছেন পদ না পেয়ে।
দলটির তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক জেলা রয়েছে ৭৮টি। এরমধ্যে মাত্র ৩৯টির সম্মেলন হয়েছে। সম্মেলন হয়নি বাকি ৩৯টি সাংগঠনিক জেলায়। অপরদিকে সম্মেলন হওয়া ৩৯টি সাংগঠিক জেলার মধ্যে প্রায় সবকটিতেই সভাপতি-সম্পাদক নির্ভর কমিটি হয়েছে। সেগুলোর মধ্যে নতুন নেতৃত্ব পেয়েছে মাত্র ৭টি জেলা। অন্যদিকে নেতৃত্বের পরিবর্তন হয়নি ২৪টিতে এবং নেতৃত্বের আংশিক পরিবর্তন হয়েছে ৮টিতে। উপজেলা পর্যায়েও একই চিত্র। ১৫ থেকে ১৮/২০ বছর সম্মেলন হয়নি, এমন উপজেলায় সম্মেলন হয়েছে। তবে সম্মেলনের পর আগের নেতৃত্ব বহাল রাখায় ক্ষোভ বাড়ছে তৃণমূলে।
একই অবস্থা কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগেও। টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা কালে দলটি ৪ বার সম্মেলন করলেও নতুন নেতা তৈরি করেছে মাত্র ৭৭ জন। এরমধ্যে সভাপতি পদে পরিবর্তন না থাকলেও সাধারণ সম্পাদক পদে মাত্র দু’বার পরিবর্তন হয়েছে। ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কমিটি ছিল ৭৫ সদস্যের, নতুন নেতা হয়েছেন ২০ জন। ২০১২ সালের সম্মেলনে ৭৫ সদস্যের কমিটিতে নতুন নেতা হয়েছেন ১২ জন। ২০১৬ সালের সম্মেলনে ৮১ সদস্যের কমিটিতে নতুন মুখ এসেছে ২৮ জন। ২০১৯ সালের সম্মেলনেও ৮১ সদস্যের কমিটিতে নতুন মুখ ছিল মাত্র ১৭ জন। আসন্ন ২২তম জাতীয় সম্মেলনের আগে শোনা যাচ্ছে, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সিংহভাগ পদে থাকছে না পরিবর্তন। মৃত্যুজনিত কারণে শূন্য হওয়া পদ পূরণ করা বা দায়িত্ব পুনর্বণ্টন ছাড়া, নেতৃত্বে তেমন পরিবর্তন আসবে না বলেই অনুমান করা যাচ্ছে। ফলে তৃণমূল থেকে কেন্দ্র, সবখানেই বাড়ছে পদপ্রত্যাশী নেতৃত্বের জট। ছাত্রলীগ ও যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন করে আসা বিপুল সংখ্যক নেতা পদ না পেয়ে নিষ্ক্রিয় থাকছেন।
তবে বিষয়টিকে সহজভাবেই নিচ্ছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বে থাকা নেতারা। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল সবাই বলছেন, দলে যেমন নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন আছে, তেমনি অভিজ্ঞদেরও প্রয়োজন। সামনে নির্বাচন, এসময় বিরোধীদের আন্দোলন মোকাবিলায় দলের অভিজ্ঞ নেতৃত্ব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।