অর্থ-বানিজ্য ডেস্ক, ০৬ মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট): বাংলাদেশের জনগণকে পিরামিড বা পঞ্জি স্কিম এবং মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) ব্যবসার প্রতারণা থেকে সাবধান থাকতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, যেখানে জনগণকে এ ধরনের সন্দেহজনক লেনদেন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, অতীতে দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অবৈধ উপায়ে গ্রাহকের আমানত সংগ্রহ করে প্রতারণার মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের ক্ষতি করেছে। গ্রাহকদের উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে এবং রেফারেল কমিশনের প্রলোভন দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান ব্যবসার নামে প্রতারণার জাল বিস্তার করেছিল। যুবক ও ডেসটিনির মতো প্রতিষ্ঠান এই ধরনের প্রতারণার জন্য কুখ্যাত, যেখানে নতুন বিনিয়োগকারীদের টাকা দিয়ে পুরনো বিনিয়োগকারীদের মুনাফা দেওয়ার নামে জনগণকে বিপদে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া, ই-ভ্যালির মতো ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানও বিশাল মূল্যছাড়ের মাধ্যমে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে পরবর্তীতে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও জানিয়েছে, পিরামিড বা পঞ্জি স্কিম সাধারণত এমনভাবে পরিচালিত হয় যেখানে বাস্তব কোনো মুনাফার উৎস থাকে না। একদল বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে সংগৃহীত অর্থ আরেক দলকে মুনাফা হিসেবে দেখানো হয়, যা একটি পর্যায়ে টেকসই না থাকায় পুরো ব্যবস্থাটি ভেঙে পড়ে। এসব প্রতারণামূলক কার্যক্রম শুধু গ্রাহকদের জন্য ক্ষতিকর নয়, এটি মানি লন্ডারিংয়ের মতো গুরুতর অপরাধের সঙ্গেও জড়িত। অতীতেও এই ধরনের বেআইনি কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তদন্তের মাধ্যমে প্রতারণার অভিযোগে সংশ্লিষ্টদের বিচারের মুখোমুখি করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া জনগণের আমানত গ্রহণ করলে তা ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৩১(১) ধারার লঙ্ঘন বলে গণ্য হবে। সাম্প্রতিক সময়ে একই ধরনের প্রতারণামূলক কার্যক্রমের পুনরাবৃত্তি লক্ষ্য করা গেছে, যা বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। জনগণের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংক সতর্ক করেছে যে, এই ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ বা লেনদেন থেকে বিরত থাকা উচিত। বিশেষ করে, উচ্চ মুনাফার লোভ দেখিয়ে পরিচালিত যেকোনো ব্যবসার প্রকৃতি ও বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তাতে অর্থ বিনিয়োগ করা উচিত নয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সতর্কতা মূলত জনগণকে সজাগ করার উদ্দেশ্যে, যাতে তারা প্রতারণার শিকার না হন এবং তাদের কষ্টার্জিত সম্পদ নিরাপদ থাকে।