খেলা ডেস্ক, ২৩মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট):
ক্রিকেট মাঠে অনেক সময় এমন কিছু মুহূর্ত তৈরি হয়, যা ম্যাচের ফলাফলের ওপর সরাসরি প্রভাব না ফেললেও আলোচনার জন্ম দেয়। আইপিএলের এবারের আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মধ্যকার লড়াইয়েও এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল। কিন্তু ম্যাচের ফলাফল একপেশে হয়ে যাওয়ায় সেটি নিয়ে বড় বিতর্ক হয়নি।
ইডেন গার্ডেনে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল কলকাতা। ইনিংসের অষ্টম ওভারে বেঙ্গালুরুর পেসার রাসিখ সালামের করা একটি শট লেংথ বল ছেড়ে দেন কলকাতার ওপেনার সুনীল নারাইন। বল চলে যায় উইকেটকিপারের গ্লাভসে, আর ঠিক সেই মুহূর্তে ব্যাটের আঘাতে নারাইনের স্টাম্পের একটি বেল পড়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বেঙ্গালুরুর ফিল্ডারদের মধ্যে কয়েকজন হিট আউটের আবেদন করেন, কিন্তু আম্পায়ার সেটি আমলে নেননি।
এই ঘটনাটি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ কৌতূহল সৃষ্টি হয়। প্রশ্ন ওঠে, ব্যাটের আঘাতে স্টাম্প ভাঙার পরও কেন নারাইনকে আউট ঘোষণা করা হয়নি? এর উত্তর রয়েছে ক্রিকেটের আইন প্রণয়নকারী সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) নিয়মাবলিতে।
এমসিসির ৩৫.১.১.২ থেকে ৩৫.১.১.৪ ধারা অনুযায়ী, একজন ব্যাটসম্যান তখনই হিট আউট হবেন, যদি তিনি প্রথম রান নেওয়ার জন্য দৌড়ানোর সময় উইকেট ভাঙেন, বল ছেড়ে দেওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে উইকেট ভাঙেন অথবা বলকে স্টাম্পে লাগা থেকে বাঁচাতে গিয়ে উইকেট ভাঙেন। কিন্তু নারাইন উপরের কোনো শর্তই পূরণ করেননি। তাছাড়া, বল ইতোমধ্যে উইকেটকিপারের গ্লাভসে পৌঁছে গিয়েছিল, ফলে সেটি ডেড বল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এ কারণেই তাকে আউট দেওয়া হয়নি।
এই ঘটনার পরও নারাইন ব্যাট হাতে আরও ২৬ রান যোগ করেন, কিন্তু কলকাতার ইনিংসকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নিয়ে যেতে পারেননি। ১৭৫ রানের লক্ষ্যে ফিল সল্ট, বিরাট কোহলি, রজত পতিদার ও লিয়াম লিভিংস্টোনের ব্যাটিং ঝড়ের সামনে ৭ উইকেট ও ২২ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় বেঙ্গালুরু।
তবে এমন ঘটনা ক্রিকেটে নতুন নয়। ২০২১ সালে হারারেতে বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের ব্যাটসম্যান ব্রেন্ডান টেলরও প্রায় একই রকম পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলেন। তবে সেবার মাঠের আম্পায়াররা তাকে হিট আউট ঘোষণা করেন। সেই ঘটনার পর এমসিসির ব্যাখ্যায় বলা হয়েছিল, বলটি ডেড হয়েছে কি না, সেটি একান্তই আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। যদি আম্পায়ার মনে করেন যে বলটি তখনো খেলার মধ্যে রয়েছে, তাহলে ব্যাটসম্যান আউট হবেন। আর যদি ফিল্ডিং দল ও ব্যাটসম্যানরা বলটিকে খেলার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা বন্ধ করে দেন, তবে সেটিকে ডেড বল ঘোষণা করা হবে।
এই নিয়মের ব্যাখ্যা জানার পর বোঝা যায়, নারাইনকে কেন আউট দেওয়া হয়নি। ক্রিকেটে প্রতি মুহূর্তেই এমন আকর্ষণীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের মাঝে নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। তবে শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ফলাফলে তেমন কোনো প্রভাব না পড়ায় এই ঘটনাটি বড় বিতর্কের জন্ম দেয়নি।