Wednesday , April 16 2025
ব্রেকিং নিউজ
Home / অর্থ বাণিজ্য / ডিপ ফ্রিজ: বিলাসিতা নয়, এখন সময়ের প্রয়োজন

ডিপ ফ্রিজ: বিলাসিতা নয়, এখন সময়ের প্রয়োজন

অর্থ-বানিজ্য ডেস্ক, ২৫মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট): একসময় বাড়িতে ডিপ ফ্রিজ রাখা অনেকের কাছে অতিরিক্ত খরচ বা বিলাসিতার অংশ মনে হতো। কিন্তু সময়ের পরিবর্তনে এটি এখন আর বিলাসিতা নয়, বরং প্রয়োজনীয় গৃহস্থালি সামগ্রীতে পরিণত হয়েছে। অনেকের প্রশ্ন থাকতে পারে—যখন ঘরে রেফ্রিজারেটর আছে, তখন আলাদা ডিপ ফ্রিজ কেন প্রয়োজন? এর মূল কারণ হলো খাদ্য সংরক্ষণের সময়সীমা বাড়ানো ও গুণগত মান অক্ষুণ্ণ রাখা।

সাধারণ রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজার অংশে জায়গার সীমাবদ্ধতার কারণে প্রয়োজনীয় খাবার সংরক্ষণ করা সম্ভব হয় না। ফলে দীর্ঘ সময়ের জন্য মাংস, মাছ, সবজি কিংবা অন্যান্য খাবার মজুত করতে আলাদা ডিপ ফ্রিজ ব্যবহার করা অধিক কার্যকর। এটি শুধু বাড়ির জন্য নয়, রেস্টুরেন্ট বা ব্যবসায়ীদের জন্যও অত্যন্ত উপকারী, কারণ একবারে বেশি পরিমাণে খাদ্য সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং খাবারের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ দীর্ঘ সময় ধরে ঠিক থাকে।

সঠিক রক্ষণাবেক্ষণে ডিপ ফ্রিজ থাকবে দীর্ঘস্থায়ী

অনেকেই মনে করেন, রেফ্রিজারেটরের মতো ডিপ ফ্রিজের যত্ন নেওয়াও বেশ কঠিন। তবে বাস্তবে এটি তুলনামূলক সহজ, যদি কিছু নিয়ম মেনে চলা যায়।

প্রথমত, ডিপ ফ্রিজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা খুব জরুরি। দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে এর ভেতরে বরফ জমে গেলে ফ্রিজের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। পাশাপাশি অতিরিক্ত বরফ দুর্গন্ধ সৃষ্টি করতে পারে এবং জীবাণুর সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই প্রতি দুই থেকে তিন মাস অন্তর ডিপ ফ্রিজ বন্ধ করে ভালোভাবে পরিষ্কার করা উচিত। ভেতরের অংশ পরিষ্কার করতে মৃদু সাবান বা বেকিং সোডা ও পানির মিশ্রণ ব্যবহার করা যেতে পারে।

খাবারের গুণগত মান ঠিক রাখতে ডিপ ফ্রিজে রাখার আগে খাবার এয়ারটাইট কনটেইনারে সংরক্ষণ করা ভালো। এতে খাবারের স্বাদ ও গন্ধ বজায় থাকে। অনেক সময় ফ্রিজারের ভেতর থেকে বাজে গন্ধ বের হয়, যা দূর করতে এক টুকরা লেবু, বেকিং সোডা কিংবা কফি পাউডার রেখে দেওয়া যেতে পারে।

ডিপ ফ্রিজের তাপমাত্রা ঠিক রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ?

খাবার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ডিপ ফ্রিজের সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখা খুবই জরুরি। সাধারণত মাইনাস ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কম তাপমাত্রায় খাবার দীর্ঘদিন ভালো থাকে। তাপমাত্রা যদি বেশি হয়ে যায়, তাহলে খাবার দ্রুত নষ্ট হতে পারে এবং এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাপমাত্রা ঠিক আছে কি না, তা নিশ্চিত করতে চাইলে থার্মোমিটার ব্যবহার করা যেতে পারে।

অনেকে ডিপ ফ্রিজে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি জিনিস রেখে দেন, যা ঠান্ডা বাতাসের চলাচলে বাধা সৃষ্টি করে। ফলে খাবার সমানভাবে ঠান্ডা হতে পারে না এবং সংরক্ষণ ক্ষমতা কমে যায়। তাই ফ্রিজের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী খাবার রাখা উচিত। সাধারণত ৭০-৮০ শতাংশ জায়গা পূর্ণ রাখাই আদর্শ, যাতে ঠান্ডা বাতাস ঠিকমতো চলাচল করতে পারে।

ফ্রিজারের যন্ত্রাংশ ঠিক রাখার উপায়

ডিপ ফ্রিজ দীর্ঘদিন ভালো রাখতে নিয়মিত কিছু রক্ষণাবেক্ষণ করা দরকার। অনেক সময় ফ্রিজের দরজার রাবার সিল বা গ্যাসকেট ঢিলা হয়ে যায়, যার ফলে ঠান্ডা বাতাস বেরিয়ে গিয়ে ফ্রিজের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। এটি নরম কাপড় দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করা এবং নষ্ট হয়ে গেলে দ্রুত পরিবর্তন করাই ভালো।

ফ্রিজারের পেছনের কনডেনসার কয়েলে ধুলাবালি জমলে এটি অতিরিক্ত গরম হয়ে কার্যক্ষমতা হারাতে পারে। তাই প্রতি ছয় মাস অন্তর দক্ষ ইলেকট্রিশিয়ানের সহায়তা নিয়ে এটি পরিষ্কার করা উচিত।

অনেক এলাকায় বিদ্যুতের ভোল্টেজ ওঠানামা করে, যা ফ্রিজের কম্প্রেসরের ক্ষতি করতে পারে। এজন্য ভালো মানের ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করা বুদ্ধিমানের কাজ।

ফ্রিজার যদি হঠাৎ অস্বাভাবিক শব্দ করে, প্রয়োজনের তুলনায় কম ঠান্ডা হয় বা বিদ্যুৎ খরচ বেড়ে যায়, তাহলে দেরি না করে টেকনিশিয়ানের সাহায্য নেওয়া উচিত। নিয়মিত সঠিকভাবে যত্ন নিলে ডিপ ফ্রিজ দীর্ঘদিন কার্যকর থাকবে এবং খাবারের মানও অক্ষুণ্ণ থাকবে।

 

About Anisur rahman Raju

চেক

ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা নিয়ে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা, ব্যাংকের চাপ বাড়ছে

অর্থ-বানিজ্য ডেস্ক, ২৭মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট): আগামী মাস থেকে দেশের ব্যাংকগুলোতে ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *