**প্রতিনিধি: মোহাম্মদ নাসিম ইসলাম | ডিজিটাল বাংলাদেশ**
বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। সদ্য আত্মপ্রকাশ করা এই দলটি আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতিবিদদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এনসিপির সম্ভাব্য অবস্থান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে নানা গুঞ্জন।
বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় বিএনপি এবার একটি বৃহত্তর জোট গঠনের পরিকল্পনা করছে। দলটি ডান-বাম ও ইসলামি দলগুলোকে এক প্ল্যাটফর্মে আনার চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামীও নিজস্ব রাজনৈতিক কৌশল অনুযায়ী বেশ কয়েকটি ইসলামি দলের সঙ্গে সংলাপে রয়েছে। তবে নতুন শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করা এনসিপি কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে রাজনীতিতে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপি বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটে যুক্ত হতে পারে, তবে দলটি জামায়াতের সঙ্গেও সমঝোতায় যেতে পারে। আবার নতুন করে অন্য কোনো জোট গঠনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এনসিপির তরফ থেকে এখনো স্পষ্ট কোনো ঘোষণা না আসলেও, তাদের অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। বিএনপির ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানিয়েছে, দলটির নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এনসিপির সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একজন সিনিয়র নেতাকে। পাশাপাশি, সরকারের উচ্চ পর্যায়ের দুই প্রভাবশালী ব্যক্তিও বিএনপি ও এনসিপির মধ্যে সমঝোতা আনতে কাজ করছেন বলে জানা গেছে।
এনসিপি সূত্রে জানা গেছে, তারা এখনো কোনো দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট নিয়ে আলোচনা করেনি। দলটি বর্তমানে নিজেদের সাংগঠনিক কাঠামো গুছিয়ে নিতে ব্যস্ত। শিগগিরই প্রতীক চূড়ান্ত করার পর নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু করবে। এনসিপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক বাস্তবতা অনুযায়ী ভবিষ্যতে যে কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠন হতে পারে, তবে এই মুহূর্তে তা নিয়ে তারা কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, **“আমাদের দল থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো দলের সঙ্গে জোট করার বিষয়ে আলোচনা হয়নি। বিএনপি বা জামায়াতের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার প্রশ্নই আসে না। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে, তখন পরিস্থিতি বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”**
অন্যদিকে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, **“জনগণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করছে। দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য যে সংগ্রাম চলেছে, সেটি সফল করতে সবার দৃষ্টি এখন সরকারের দিকে। নির্বাচনে বিএনপি এককভাবে অংশ নেবে, নাকি জোট গঠন করবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়।”**
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, ততই নতুন সমীকরণ স্পষ্ট হবে। বিএনপি যদি বৃহত্তর জোট গঠন করতে চায়, তবে এনসিপির মতো উদীয়মান দলগুলোকে যুক্ত করার চেষ্টা করবে। তবে জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির দূরত্ব থাকায় এনসিপির অবস্থান এখনো অনিশ্চিত। অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে অংশ নেয়, তবে রাজনৈতিক কৌশলে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পর্দার আড়ালে চলা আলোচনার প্রভাব আগামী নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে স্পষ্ট হবে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।