রাজনৈতিক০৯ মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট): সিরিয়ায় সাম্প্রতিক দমন অভিযান ও সংঘর্ষ দেশটিকে আবারও অস্থিরতার মুখে ঠেলে দিয়েছে। লাতাকিয়া প্রদেশের আলাউইত অধ্যুষিত এলাকায় ইসলামপন্থী সরকারের অনুগত বাহিনী ও বন্দুকধারীদের হামলায় কয়েক শত নারী, শিশু ও সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা **সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর)** জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে শনিবার পর্যন্ত প্রায় **৭৪৫ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন** এবং অন্তত **৩০টি গণহত্যার ঘটনা ঘটেছে**।
এসওএইচআরের প্রধান রামি আব্দুল রাহমান জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে সিরিয়ার জাবলেহ, বানিয়াসসহ আশপাশের এলাকায় ব্যাপক হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, **আলাউইত সম্প্রদায়কে পরিকল্পিতভাবে টার্গেট করা হচ্ছে**, যার ফলে তারা নিজ নিজ এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন।

সংঘর্ষে শুধুমাত্র বেসামরিক জনগণই নয়, সরকারপন্থী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য এবং বিদ্রোহীদের পক্ষেও ব্যাপক প্রাণহানি হয়েছে। এসওএইচআর জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে **বর্তমান সরকারের ১২৫ জন নিরাপত্তা রক্ষী ও ১৪৮ জন আসাদপন্থী যোদ্ধা রয়েছেন**। এটি গত ডিসেম্বরে বাশার আল-আসাদের পতনের পর **সিরিয়ায় সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতা** হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
**বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে**, সংঘর্ষের ফলে আলাউইত সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন। লাতাকিয়ার **মেইমিমে অবস্থিত রাশিয়ান ঘাঁটিতে** শরণার্থীদের ভিড় বাড়ছে, যেখানে রাশিয়ার সুরক্ষার দাবিতে অনেকে স্লোগান দিচ্ছেন।
**বার্তাসংস্থা রয়টার্স** জানিয়েছে, সিরিয়ার বর্তমান সরকার দাবি করেছে যে **বিদ্রোহী বাহিনী তাদের ওপর প্রাণঘাতী চোরাগোপ্তা হামলা চালিয়েছে**, যার প্রতিক্রিয়ায় দমন অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। তবে সরকারি বাহিনীর কিছু কর্মকর্তাও স্বীকার করেছেন যে এই অভিযানে **মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে**।
সিরিয়ায় চলমান এই সংকট আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, **এই সহিংসতা শুধু সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতিকেই নয়, বরং গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করছে**।