মানিকগঞ্জের দৌলতপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে গ্রেফতার শিক্ষক শরিফুল ইসলাম সেন্টুকে (৩৬) সাময়িক বহিষ্কার করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিকেলে এক জরুরি সভায় তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে, এদিন দুপুরে তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন মানিকগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক গোলাম সারোয়ার।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) ভিকটিমের বাবা বাদী হয়ে থানায় মামলা করলে ওই রাতেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়। পরে বুধবার (১০ জুলাই) দুপুরে পাঁচ দিনের রিমান্ড চেয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়।
দৌলতপুর প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, যৌন নিপীড়নের মতো ন্যাক্কারজনক এ ঘটনার প্রতিবাদ এবং অভিযুক্ত দৌলতপুর প্রমোদা সুন্দরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক শরিফুলের শাস্তির দাবিতে দুপুরে স্কুল ক্যাম্পাসে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা অংশ নেন।
কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে দাবির সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাবরিনা শারমিন।
প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগে শরিফুল গ্রেফতার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয়ে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। স্কুলের বর্তমান সভাপতি ও ইউএনও সাবরিনা শারমিন এতে সভাপতিত্ব করেন। সভায় অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন ইউএনও। রোববার (১৩ জুলাই) এ কমিটি গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।
মামলার অভিযোগ ও পুলিশ সূত্র জানায়, মামলার বাদীর মা প্রায়ই শিক্ষক শরিফুলের বাড়িতে গিয়ে বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করতেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে প্রথম দিকে তার নাতনিকে নিয়ে ওই বাড়িতে গেলে শিক্ষক শরিফুল তাকে যৌন নিপীড়ন করেন। এরপর একাধিকবার ওই শিক্ষার্থী নানাভাবে যৌন নিপীড়নসহ ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানালেও লোক-লজ্জার ভয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি তারা।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) দুপুরে স্কুল প্রাঙ্গণে সহপাঠীদের সঙ্গে খেলা করার সময় শ্বাসকষ্টে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে ওই মেয়েটি। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরবর্তীতে মুন্নু মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথেও ওই শিক্ষক মেয়েটিকে যৌন নিপীড়ন চালায় বলে জানা যায়।
মুন্নু মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ওই স্কুলছাত্রী কয়েকজন নার্স ও চিকিৎসকের কাছে শিক্ষক শরিফুলের যৌন হয়রানি বিষয়টি জানায়। পরে তারা পুলিশকে জানালে ঘটনা প্রকাশ পায়।