পাবনা থেকে শামীমা হক: নাটোরের লালপুর ও বড়াইগ্রামে হত্যা করে গাড়ি ছিনতাই, ডাকাতি, দস্যুতাসহ ১৫টির বেশি মামলার আসামি ও ছিনতাইকারী দলের সদস্য মানিকুজ্জামান ওরফে সুমন (৪৮) পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১২ জুলাই) দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে লালপুর উপজেলার গোপালপুরের তোফাকাটা মোড় এলাকায় এ ‘বন্দুকযুদ্ধ’ হয়।
এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। তারা হলেন-উপ পরিদর্শক (এসআই) রবিউল, কনস্টেবল মাহাবুব ও আমিনুর রহমান। তাদের লালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
নিহত মানিকুজ্জামান পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলার পূর্বটেংরী শেরপাড়া এলাকার ইউসুফ আলীর ছেলে।
লালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল শনিবার (১৩ জুলাই) সকালে এতথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি গণমাধ্যমকে জানান, গত ৫ জুলাই বিকেলে নাটোরের বড়াইগ্রামে কলেজছাত্র আল আমিনকে (২০) গুলি করে মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের মামলায় শ্যুটার মানিককে শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বড়াইগ্রাম থানা পুলিশ। একই সঙ্গে ওই এলাকার একটি বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
পরে জিজ্ঞাসাবাদে কলেজছাত্র আল আমিনককে হত্যা ও মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করেন তিনি। একই সঙ্গে সম্প্রতি লালপুরে ব্যবসায়ী অলোক বাগচিকে হত্যা করে মোটরসাইকেল ছিনতাই ও চালককে গুলি করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত থাকার কথাও স্বীকার করেন মানিক।
পরে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ ও অস্ত্র উদ্ধারসহ তার সহযোগীদের গ্রেফতারের জন্য শুক্রবার (১২ জুলাই) দিনগত রাতে তাকে বড়াইগ্রাম থেকে লালপুর থানায় নিয়ে আসার সময় রাত সোয়া দুইটার দিকে উপজেলার গোপালপুরের তোফাকাটা মোড় নামক স্থানে পৌঁছালে শ্যুটার মানিকের সহযোগীরা পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে।
আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। এ সময় পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে পালানোর চেষ্টাকালে গুলিবিদ্ধ হয় মানিক। উভয় পক্ষের গুলিবিনিময়ের একপর্যায়ে মানিকের সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মানিককে উদ্ধার করে লালপুর থানা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তিনি আরও বলেন, তার নামে ঈশ্বরদী, লালপুর, বড়াইগ্রামসহ বিভিন্ন থানায় ১৫টির বেশি মামলা রয়েছে। তার সহযোগীদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার দাস গণমাধ্যমকে বলেন, গত ৫ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৫টার সময় উপজেলার নগর ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামের বটতলা এলাকায় কলেজছাত্র আল আমিনকে গুলি করে হত্যার পর মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় বাদী হয়ে ওইদিন তার বাবা অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত আল আমিন ওই গ্রামের সাহাদত হোসেন সাহাদের ছেলে। সে খলিসাডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের এইচ এসসির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল।