নিউজ ডেস্ক: শেষ কবে হরতাল হয়েছিল সেটা অনেকটা ভুলেই গিয়েছিল নগরবাসী। রাজনৈতিক দলগুলোর ডাকা সবশেষ হরতাল পালিত হয় ২০১৫ সালে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের বর্ষপূর্তিতে টানা কয়েক মাস হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করে বিএনপি জোট। পরে আস্তে আস্তে ফিকে হয়ে যায় সেই আন্দোলন। বিএনপিও হরতালের রাজনীতি থেকে অঘোষিতভাবে ফিরে আসে।
তবে শনিবারে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপির অভিযোগ এনে প্রায় পাঁচ বছর পর হরতালের ডাক দেয় বিএনপি। রবিবার ভোর ছয়টা থেকে রাজধানীতে এই হরতাল পালিত হচ্ছে। চলবে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত।
তবে হরতালের সকালে রাজধানীর জীবনযাত্রায় তেমন কোনো প্রভাব চোখে পড়েনি। রাস্তায় চলছে যানবাহন। আছে ব্যক্তিগত গাড়িও। কোথাও কোথাও যানজটও লেগেছে। ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে দূরপাল্লার পরিবহনও। যথারীতি চলছে ট্রেন ও লঞ্চ।
নয়াপল্টন ছাড়া হরতালের সমর্থনে কোথাও পিকেটিং চোখে পড়েনি। রাজধানীতে এখন পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খরব পাওয়া যায়নি।
তবে অসুস্থতা নিয়েও কার্যালয়ে ছুটে এসেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে কার্যালয়ের সামনে বসে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। প্রতীকী ইভিএম পুড়িয়ে প্রতিবাদও জানিয়েছেন।
রিজভী বলেন, ‘জনগণ বিএনপির দাবির প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছে।’
হরতালকে ঘিরে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিএনপি কার্যালয় ও এর আশপাশের এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে শনিবার সন্ধ্যায় এই হরতালের ডাক দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। হরতাল কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
২০১৫ সালে টানা কয়েক মাস আন্দোলনের পর হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসে বিএনপি। এমনকি দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পরেও হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচির ডাক দেয়নি বিএনপি। ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভরাডুবি সত্ত্বেও হরতাল ডাকেনি বিএনপি। পাঁচ বছর পর আবার চিরাচরিত কর্মসূচি হরতালের দিকে ফিরল এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতার বাইরে থাকা দলটি।
