নিউজ ডেস্ক: মানুষের চলাচলের জন্য নেই কোন সড়ক। আশপাশে নেই কোন জনবসতি। ফসলে ভরা পানিশূন্য মরা এক নদী। নদীটির এপাড়ে ওপাড়ে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। সেই নদীটির মাঝখানে ধান ক্ষেতের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে এক সেতু। নিঃসঙ্গ সেতুটি ফাঁকা মাঠেই দাঁড়িয়ে আছে পাঁচ বছর। কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দি ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা মরা সিংগুয়া নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটি। সেতুটি নির্মাণ করেছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয়। সংযোগহীন এই সেতুটি নির্মানে সরকারের ১৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওই কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, মানুষের প্রয়োজনীয়তা দেখিয়ে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে প্রায় ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট দৈর্ঘের এ সেতুটি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহবান করে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। মাহবুব এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নির্মাণের দায়িত্ব পায়। ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মো. আরিফুজ্জামান খন্দকার দরপত্র অনুযায়ী কাজটি সম্পন্ন করলেও সেতুটি কারো কোনো কাজে আসছে না।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটি ধান ক্ষেতের মাঝখানে ফাঁকা জায়গায় বেকার দাঁড়িয়ে আছে। সেতুটির একপাশে নারান্দি ইউনিয়ন আর অন্যপাশে পাটুয়াভাঙ্গা ইউনিয়ন। সেতুটির চারদিকেই বিস্তীর্ণ ফসলি জমি। সেতুটির দক্ষিণ পাশে একটু দূরে একই নদীর ওপরেই যুগীর পুল নামের আরেকটি সেতু রয়েছে। যুগীর পুল দিয়েই আদিকাল থেকে এলাকার মানুষজন চলাফেরা করে আসছেন। তাই এ সেতুটির উপর দিয়ে জনসাধারনের আসা যাওয়ার কোনো প্রয়োজনই নেই। ফলে কেন বা কার স্বার্থে এত টাকা ব্যয়ে এ সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে তার উত্তর খোঁজে পাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন উপ-সহকারী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম রাকিব বলেন, ব্রিজটি নির্মান শেষে আমি এই অফিসে যোগদান করেছি। শুধুমাত্র একদিন ওই ব্রিজটিকে দেখতে গিয়েছিলাম। তাই এ বিষয়ে আমি কিছুই বলতে পারছি না। তবে তিনি বলেন, অযথাই ব্রিজটি এখানে নির্মাণ করা হয়েছে।
পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রওশন করিম বলেন, দেড় বছর হয়েছে আমি এই অফিসে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমার কিছুই জানা নেই।
