Wednesday , April 16 2025
ব্রেকিং নিউজ
Home / অন্যান্য খবর / ভাস্কর্য ইস্যুতে সাম্প্রতিক আন্দোলন।। নেপথ্য কারণ

ভাস্কর্য ইস্যুতে সাম্প্রতিক আন্দোলন।। নেপথ্য কারণ

এস,এম,আজিজুল হক : সৃষ্টির উষালগ্ন থেকেই মানুষ সমসাময়ীক কালের উল্লেখযোগ্য বিষয়াদীর বিমুর্ত প্রতিক ও ভাস্কর্য নির্মানের মাধ্যমে কালান্তর ঘটানোর প্রাণান্তক প্রচেষ্টা চালিয়ে আসছে। লিখিত ইতিহাস না থাকলেও ওই সব বিমুর্ত চিত্র ও ভাস্কর্যের মাধ্যমে আমরা অতিতের অনেক কিছুই হৃদয়ঙ্গম করতে পারি। সভ্যতার শুরুতে সেই প্রচেষ্টা আরো প্রবল হয়ে ওঠে এবং সেই প্রচেষ্টাগুলিকে নান্দনিক রুপ দিয়ে এক মহামুল্যবান শিল্পকর্মে রুপ নেয়। ইসলাম ধর্মের প্রবর্তণের শুরু থেকেই মুসলিম সভ্যতার শিল্প সাহিত্যের জোতি বিশ্বময় ছড়াতে থাকে। এসময় পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধেও অবস্থান নেয় মুসলমানেরা। আর এই পৌত্তলিকতার বিরুদ্ধে কথা বলার মুল কারণ-সেই সময়কার কিছু সম্প্রদায় নানান রকম কল্পিত মুর্তির ভিতর ঈশ্বরের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করতো। এমন কি এক ঈশ্বরে বিশ্বাসী সম্প্রদায়গুলোও ঈশ্বরের খন্ডিত শক্তি হিসেবে নানা রকম কল্পিত দেবদেবীর মুর্তি তৈরি করে পূজা করতো। তবে তখনও অনেক ভাস্বকর্য থাকা সত্বেও অনেক ভাস্বকর্যই এই পূজার আওতায় আনা হয়নি বা পূজনীয় বলে গন্যও হয়নি। এবং তখন থেকেই ভাস্বকর্য ও প্রতিমা পৃথক রুপ পায়। প্রতিমাও এক ধরণের ভাস্কর্য কিন্ত তা শুধুমাত্র পূজার জন্য তৈরি করা হয় বলে ভাস্কর্যের গৌরব ও নাম হারিয়ে ফেলে। সনাতন ধর্মমতে প্রতিমাকে কেউ ভাস্কর্য বলে না। আবার কোন ভাস্কর্যকেও তারা প্রতিমা বলে না। ভাস্কর্য হচ্ছে ইতিহাস ঐতিহ্যের কালজয়ী ধারক বাহক ও স্বাক্ষী আর প্রতিমা হচ্ছে পূজনীয় কল্পিত দেবদেবীর মুর্তি। সহজ ভাবে বলা যায়, প্রতিমা পূজনীয় আর ভাস্বকর্য হচ্ছে স্মরণীয়। তা ছাড়া ভাস্বকর্য হচ্ছে সার্বজনীন শিল্পকর্ম যা শতাব্দীর সাথে শতাব্দীর সেতুবন্ধন তৈরি করে। অন্যদিকে প্রতিমা বা মুর্তি সার্বজনীন শিল্পকর্ম নয় যা শুধু মাত্র একটি ধর্মের পূজনীয় প্রতিমা স্বরুপ। পূজা শেষে ওই মুর্তিকে বিসর্জনের নামে ধ্বংস করা হয় কিন্তু ভাস্কর্য শতাব্দীর পর শতাব্দী ইতিহাস ঐতিহ্য বহন করে থাকে।
আমাদের দেশসহ পৃথিবীর সকল মুসলিম অমুসলিম দেশে রয়েছে নানা ভাস্কর্য যা প্রতিটি দেশের ইতিহাস ঐতিহ্যের মাইল ফলক হিসেবে সর্বজন স্বীকৃত। বিতর্ক সৃষ্টি করে কোন কিছু ধ্বংস করা খুব সহজ। কিন্তু সৃষ্টি করা সহজ নয়। যারা নিজেদের ইতিহাস ঐতিহ্যকে ধর্মের ভুল ও বিতর্কিত ব্যাখ্যা দিয়ে ধ্বংস করতে চায়-আর যাই হোক তাদেরকে ধার্মিক বা দেশ প্রেমিক বলা যায় না।
করোনার কড়াল থাবায় বিশ্বমানবতা যখন বিপন্ন, তখন এক শ্রেণির উগ্রবাদী ধর্মান্ধ সে দিকে কোন অবদান না রেখে ভাস্বকর্য ইস্যু সৃষ্টি করে গোটা দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে ব্যস্ত। আমাদের দেশে অনেক মানুষের ভাস্কর্য রয়েছে। এ নিয়ে কখনো কাউকে টু শব্দটি করতে দেখা যায়নি। বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতীর জনকের ভাস্কর্য নির্মাণ করতে যেয়েই এক শ্রেণির কথিত আলেমের গায়ে হঠাৎ ফোস্কা পড়ে গেল? ধর্মের আড়ালে আবডালে রাজনৈতিক কুমতলব লুকিয়ে ধর্মের বানী প্রচার করা করা যায় না। স্বাধীনতা বিরোধী চক্র সুকৌশলে আমাদের সহজ সরল ধর্মপ্রাণ মুসলমান আলেম ওলামাদের ভুল বুঝিয়ে বিপথগামী করার চেষ্টা করছে। জাতীয় সম্পৃতি নষ্ট করে মানুষের মধ্যে ঝঘড়া বিবাদ লাগিয়ে দিয়ে ফায়দা লোটার পায়তারা করছে। ইসলামের সার্বজনীনতাকে করে তুলছে প্রশ্নবিদ্ধ। রাষ্ট্রের দায়ীত্ব রয়েছে এই সব অপচেষ্টাকারী গোষ্ঠীকে সমুলে উৎপাটন করে সোনার বাংলার শান্তিকে আগাছামুক্ত করা। এ দায় সরকার কোন ভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না। ধর্মীয় ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে মাঝে মধ্যেই নানা ইস্যু সৃষ্টি করে অশান্তি ডেকে আনার পথকে চিরতরে বন্ধ করার দায়ীত্ব রাষ্ট্রের। জাতী সে দিকেই অধির আগ্রহে তাকিয়ে আছে।

About digitalbanladesh2

চেক

ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা নিয়ে ব্যবসায়ীদের শঙ্কা, ব্যাংকের চাপ বাড়ছে

অর্থ-বানিজ্য ডেস্ক, ২৭মার্চ ২০২৫ইং (ডিজিটাল বাংলাদেশ রিপোর্ট): আগামী মাস থেকে দেশের ব্যাংকগুলোতে ঋণখেলাপির নতুন নীতিমালা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *